Blog

বারাসাতের ইতিহাস | সৌরভ বারুই

বারাসাতের অনেক অজানা ইতিহাস

নামকরন

বারাসাত নগরী রূপে প্রথম মর্যাদা পায় ব্রিটিশ আমলে। বারাসাত এই নামের পিছনে একাধিক জনশ্রুতি আছে। বারাসাত একটি আরবি শব্দ যার আর্থ হল ‘পথের শোভা’। ওয়ারেন হেস্টিং পথের দুই পাশে নয়নরঞ্জক বা সুদৃশ্যমান প্রচুর গাছ রোপণ করেন।

আবার কথিত আছে যে, প্রখ্যাত মানিকচাঁদ জগৎশেঠের পরিবারের বারোজন সদস্য এখানে বাস করতেন। বারাসাত নগরের কেন্দ্রস্থলে শেঠপুকুরটি নির্মাণ করান রামচন্দ্র জগৎশেঠে। উদ্যেশ্য ছিল ওয়ারেন হেস্টিংকে খুশী করা। হয়তো ‘বারোশেঠ’ অপভ্রংশ হয়ে ‘বারাসাত’ হয়েছে।

অপর ব্যাখ্যাটি হল ষোড়শ শতাব্দীতে বারাসাতে এই নাম দেওয়া হয়- ফার্সি মতে ‘বার’ –এর অর্থ ‘পুর’ বা ‘জনপদ’। ‘সাত’ -সাত সংখ্যার দ্যোতক। এই সাতটি জনপদ হল- শ্রীধরপুর, ‘হৃদয়পুর’, ‘বনমালিপুর’, ‘প্রসাদপুর’, ‘চন্ননপুর’ ও ‘নিশচিন্দপুর’।

তবে শেষ দুটি অস্তিত্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় নি।

ইতিহাস

বারাসাতের ইতিহাস সুদূর প্রসারি এবং দুর্ভেদ্য। গুপ্ত যুগ থেকে শুরু করে বারাসাতের প্রেক্ষিত ইতিহাস পাওয়া যায়।

বারাসাত, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শহরটি সুন্দর বনের ‘ব’দ্বীপ আঞ্চল ছিল। তখন বারাসাতে বাঘ, কুমির তথা অন্যান্য বন্য যন্তু বাস করত। তার সাথে বাস করত বিভিন্ন প্রজাতির আদিবাসীরা।

ওই সময় বারাসাতে ‘সুবর্নবতী, লাবন্যবতী’ নামে দুতি নদী প্রবাহিত হত। যা বারাসাত কে উর্বর করেছে শস্য-শ্যামলায় ফলমূল বৃক্ষে পরিনত করেছে সেই সাথে ব্যবসা বাণিজ্যে সহায়তা করেছে, শত্রুর আগমনের পথ সুগম করেছিল। বর্তমানে নদী গুলি তার নামে ও চরিত্রে ভ্রষ্ট হয়ে ‘সুঁটি’ ও ‘নোয়াই’ নামে আত্যন্ত বিনষ্ট একটা অস্তিত্য রাখছে।

বারাসাতের অদূরেই ‘দেগঙ্গা’ নামক জনপদ’টি তার নামের মধ্যেই বহন করছে ‘দ্বিগঙ্গা’, ‘দীর্ঘগঙ্গা’, ‘দ্বীপগঙ্গা’, ‘দেবগঙ্গা’ নামের নদী ও নদীবন্দরের বিলুপ্তির কথা বলে দেয়।

চন্দ্রকেতুগড়ের খনা মিহিরের ঢিবি থেকে দু-কিলোমিটার উত্তরে ‘পদ্মা’ (এটি বাংলাদেশের পদ্মা নয়) এখনো বিদ্যমান। শুষ্ক জলখাদ ধরে হাঁটলে মিল্বে হারানো গতিপথের বালুকাস্তর। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রাচীন নগরীর প্রাণশক্তি ছিল পদ্মা, পদ্মাই ছিল চন্দ্রকেতুগড়ের সভ্যতা, সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক বিকাশের মূখ্য প্রবাহ পথ।

চন্দ্রকেতুগড়, বেড়াচাপা অঞ্চল ছাড়াও বারসাত সংলগ্ন হাটথুবা(হাবরা), মাধবপুর, বারাসাতস্থ দক্ষিণপাড়া আঞ্চলে কিছুদিন পূর্বেই উদ্ধার হওয়া বিষ্ণুমূর্তি ও বৌদ্ধ যুগের মৃৎপাত্র ও অন্যান্য দ্রব্যাদি, যা এই জনপদের প্রাচীন সংস্কৃতির পরিচায়ক।

বর্তমানের কাজিপাড়ায় আধুনালুপ্ত সুবর্নমতী নদীর ধারে ‘জগদিঘাটায়’ ছিল প্রতাপাদিত্যের নৌঘাঁটি।

আইনি আকবরি থেকে জানা যায়, আকবরের সেনাপতি মহারাজ মানসিংহের প্রতাপাদিত্য (১৬০০ খ্রিঃ যশোরের রাজা) পরাজিত হন এবং পরে তাদের আগ্রায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্রতাপাদিত্যের ব্রাহ্মান সেনাপতি সংকর চক্রবর্তীকে আকবর স্ত্রী যোধাবাইএর আনুরধক্রমে স্বসন্মানে মুক্তি দেওয়া হয়। এই সংকরের বাসস্থন ছিল বারাসাতে,যা এখনো বর্তমান বারাসাতের দক্ষিণপাড়ায়। ভক্তিমতী যোধাবাই -এর আনুরোধ ক্রমে তার সংকল্পে শঙ্কর চক্রবর্তী নিজ বাসস্থনে দুরগাপুজা করেন- ২৪ পরগনায় সেটি প্রথম দুর্গাপূজা এবং আজও বংশ পরম্পরায় পুজা হয়ে চলেছে।

যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্য (১৫৬১-১৬১১) ১৬০০ সালে যশোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত যশোর রোড তৈরি করেন।

মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে আরও একজন বারাসাতবাসী যুবক ‘রামসুন্দর মিত্র’ বঙ্গদেশের জমিজারিপের কাজে আকবরের ভুমিরাজস্ব মন্ত্রী টোডরমলকে প্রশংসনীয় সহায়তা করেন। তিনি ‘রায়-রায়ন’ উপাধি ও গয়াজেলার জায়গীরদারি লাভ করেন।

ষোড়শ শতাব্দীতে পীর হজরত একদিল শাহ্‌ বারাসাতের কাজিপাড়ায় বসবাস করতে শুরু করেন। গৌড়ের হবশী সুলতানি রাজত্বের শেষ সময় ১৭০০ সালের দিকে আথবা উনি হোসেন শাহের রাজত্বকালের প্রথমদিকে বারাসাতে আসেন বলে অনেকে মনেকরেন। কথিত আছে উনি অনেক অলৌকিক শক্তির পরিচয় দেন। এই দরবেশ ইসলাম ধর্ম প্রচারার্থে আসেছিলের বলে অনুমান করা হয়ে থাকে। এখানে প্রাচীন মসজিদ আছে এবং তাঁর স্মৃতিসন্মানে বাৎসরিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ওনার নিজের জমিতে ১৮৮৫ সালে “কাজিপাড়া একদিল শাহ্‌ হাই স্কুল” প্রতিষ্ঠা হয়। কাজিপাড়ায় একদিল শাহ্‌ -এর সমাধি দেখতে পাওয়া যায়।

নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ১৭৫৭ সালে মুর্শিদাবাদ থেকে বারাসাত হয়ে কলকাতা পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি করন। মুর্শিদাবাদের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নাম অনুসারে ওঁই রাস্তার নাম দেন কৃষ্ণনগর রোড।

হিল মন্তব্যকরেছেন- ১৭৫৬ সালে সিরাজ-উদ-দৌলা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অভিযান করে ভারতে আসেন।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের কাছে বারাসাত ছিল সপ্তাহ শেষের প্রমোদ নগরী।

রবার্ট ক্লাইব বারাসাতের পাঁচ মাইল দঃ কামারডাঙায় প্রসাদোপম বাড়ি কেনেন।

কম্পানি শাসনের আমলে গভর্নর ওয়ারেন্ট হেস্টিং –এর আত্যন্ত প্রিয় জায়গা ছিল বা শিক্ষার জায়গা ছিল বারাসাত। তখন বারাসাত জঙ্গল বহুল আঞ্চল ছিল। তিনি বারাসাতের উত্তরাঞ্চলে ইংলিশ স্টাইলে একটি দতলা বাড়ি করেন যা হেস্টিং ভেলি নামে পরিচিত। বাড়িটির মেঝে ওক কাঠের, দেয়ালে ইটের গাঁথনি, বড় বড় প্রকাণ্ড দরজা জানালা ইত্যাদি। শোনাজায় ট্রেজারি পর্যন্ত গুপ্ত সুড়ঙ্গ রয়েছে, তার দরজা সরকার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ভ্যান্সিতার্ট যিনি লর্ড ক্লাইভের পর গভর্নর হন, তার তিনতলা ভিলাটিতে আছে বৃহৎ ও প্রশস্ত কক্ষসকল, তিরিশ বিঘা আয়তন জুড়ে এই বাড়ি- যা বর্তমানে মহাকুমা শাসকের কার্যালয়।

মি. ল্যাম্বার্ট বাড়ি করলেন ‘মধুমুরালী’ দীঘির দক্ষিণ-পূর্বে ১৭৬৪ সালে। মিসেস ল্যাম্বার্ট একটি বাজার স্থাপন করেন যার নাম ‘বিবির হাট’।

শুকর শিকার, তাসখেলা, বলড্যান্স, ডিনারের আসর, রেসকোর্স ইত্যাদি ইস্ট ইন্ডিয়ার শাসক দের সুনিবেন হতে থাকত।

ফিটনগাড়ি, পালকি ইত্যাদি ছিল ইংরেজ দের বারাসাতে আসার যানবহন।

এই সময় শাসক দের স্বর্নময় দিনে জন্মেছিলেন এ্যান্টনি কবিয়াল, যিনি ছিলেন একজন এংলো ইন্ডিয়ান।

১৭৭৪ সালে বারাসাতের ইংরেজরা ঘোড়ার দৌড় বা রেসকোর্স খেলার সুচনা করে।

এই সময় বারাসাতের চারপাশে শুরু হয় নীল চাষ। ডাচেরা প্রথম নীল চাষ শুরু করে বারাসাতের পশ্চিমাংশে কলপুকুরে। নিকটবর্তী নীলগঞ্জে বাংলার প্রথম নীল কারখানা তৈরি হয় (১৭৭৯), সমগ্র মহাকুমা ‘Blue Distric’ বা ‘নীল জেলা’ নামে খ্যাত হয়। বারাসাত স্টেশনের কাছে নীলপুকুর, নীলকর সাহেবদের বাংলো ও থাকার জায়গা। এঁদের দুই বোন চাঁপা বা চম্পা ও ডালি যারা ‘চাঁপাডালি’ বা ‘চম্পাডালি মোড়’ নামে বেঁচে আছেন।

এই সময় নীল কর সাহেবরা নিজেদের ও বারাসাতের গ্রাম বাসীর স্বার্থের জন্য হাটখোলায় ছোট হাসপাতাল নির্মাণ করেন।

বারাসাত, বাদু ও মহেশ্বরপুর আঞ্চল এখানে ১২০০ ব্রাহ্মন এর বাস ছিল। প্রাচীন অধবাসিরা এর সাপেক্ষে বলেন আগে হাটখোলা মোড়ে রেলস্টেশন বিদ্যমান ছিল। যা হাটখোলার “বারাশত” বানানযুক্ত হোর্ডিং প্রমানের সাক্ষ্য দেয়।

· বারাসাতের মধ্যস্থলে ১৮০২ সালে, সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য ২৫২ বিঘা ২ কাঠা জমির উপর স্থাপিত হয় ক্যাবেট কলেজ বারাসাত ঘষিত হল- “The Sundhurst of Bengal” নামে।

Licut Charls Paton ৯ই অক্টোবর ১৮১০ সালে Cabit ট্রেনিং শেষ করেন (The Cabit Institute of Barasat under The East India Company )।

ক্যাবেট দের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারনে ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে ক্যাডেট কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানটি হস্তান্তরিত হয় নীল কর সাহেবদের হাতে। পরে ১৮৪৪ সালে তা জেলখানায় রূপান্তরিত হয়।

এর কিছু পরেই বারাসাত থেকে জ্বলে উঠে সাম্রাজ্যবাদি শ্বাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহের ধ্বনি, তিতুমিরের নেতৃত্ব ১৮৩১ সালে বারাসাত বিদ্রোহ। বিদ্রোহ দমনের জন্য বারাসাত ফৌজ নিয়োগ করা হয়। সরকারী নথিপত্রে এই বিদ্রোহ বারাসাত বিদ্রোহ নামে খ্যাত। আরতের এটাই প্রথম কৃষক বিদ্রোহ যেখানে কামান ব্যবহার করা হয়েছিলো।

জেলা ভবনের খালি জায়গায় ১৮৪৬ সালে ১লা জানুয়ারি সুচনা হয় জেলা স্কুলের। যার বর্তমান নাম “বারাসাত প্যারিচরন সরকার গভার্নমেন্ট স্কুল”। প্যারিচরন সরকার ছিলেন এই স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক, তখন তার বয়স মাত্র ২২। তার সাথে যুক্ত হলেন ডেভিড হেয়ারের ছাত্র কালীকৃষ্ণ মিত্র, তাঁর দাদা ডঃ নবিনকৃষ্ণ মিত্র, প্রতি সপ্তাহে ঘোড়ার গাড়িতে করে আসতেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়, মদনমোহন তর্কলঙ্কার, হরপ্রশাদ শাস্ত্রী প্রমুখ। সাহায্যের হাত বাড়ালেন বিন্নী ট্রেভর, তখনকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। প্যারিচরন লিখলেন 1st and 2nd for Reading।

১৮৪৭খ্রিস্টাব্দে কালীকৃষ্ণ মিত্রের উদ্যোগে ও অন্যান্য বিশিষ্ট মানুষের সহযোগিতায় ভারতের প্রথম বালিকা বিদ্যালয় “কালীকৃষ্ণ বালিকা বিদ্যালয়” স্থাপিত হয় বারাসাতে।

বারাসাতের দৃষ্টান্তে দত্তপুকুরের আরেক শিক্ষানুরাগী কালীকৃষ্ণ দত্ত ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ইনি ছিলেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার যন্ত্রাধ্যক্ষ। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসগরের পৃষ্ঠপোষকতায় ও অর্থসাহায্য এই বিদ্যালয়ের ভিত্তি- জ স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এই অর্থ সাহায্য চালিয়ে গেছেন তাঁর পিতার মৃত্যুর পরেও।

সিপাহী বিদ্রোহের ৩ বছর পূর্বে বসিরহাটের ভ্যাবলা গ্রামে ২৩ সে জুন ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে রাজেন্দ্র মুখোপাধ্যায় জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা ভগবানচন্দ্র বারাসাত আদালতের নামাজাদা উকিল ছিলেন।

ঐ সময়ি বারাসাতে ডঃ নবিনকৃষ্ণ মিত্রের দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষ সমন্বিত যে উদ্যানটি ছিল দেড়শো বিঘের উপর, সেখানে বিলিতি যন্ত্রে চাষ হত। হাইকোর্টের বিচার পতি প্রিন্সেপ, ম্যাজিস্ট্রেট কতৃক উচ্চপ্রসংসিত এই উদ্যানে পরবর্তীকালে বাস করতেন। পরে ১৯০৬ সালে ওই যায়গায় বারাসাত-বসিরহাট রেলপথ বসান তৎকালীন নামজাদা ইঞ্জিনিয়ার রাজেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ।

কালীকৃষ্ণ মিত্র তথা বারাসাতের নাগরিক সমাজ বিদ্যাসগরের বিধবা বিবাহ আন্দোলনে সক্রিয় সাহায্য করেন। ৭ই ডিসেম্বর ১৮৫৫ সালে কালীকৃষ্ণ মিত্রের নেতৃত্বে বারাসাত ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩১৬ জন নাগরিক বিধবা বিবাহের সমর্থনে সাক্ষর দিয়ে ভারত সরকারের কাছে পাঠান। ১০ই এপ্রিল ১৮৫৬ তারিখে এই রূপ আরও একটি আবেদন পত্র সরকারের কাছে পাঠানো হয়। ২৭শে ডিসেম্বর ১৮৫৬ তারিখে বিদ্যাসগর মহাশয় বিধবা বিবাহ রহিত করার জন্য সরকারের কাছে একটি আবেদন পত্র পাঠান। এক্ষেত্রেও বারাসাত বাসীর সংগ্রহীত সাক্ষর পাঠান যা ওই তথ্য কে আরও সুগঠিত করে।

১৮৫৪ সালে হাটখোলা ডিস্পেন্সি ( বারাসাত জেলা হাসাপাতালের পুর্ব নাম) শুরু হয় বারাসাতের হাটখোলায়। ১৯৬১ সালে নাম পরিবর্তিত হয়ে নাম হয় বারাসাত জেলা হাসপাতাল এবং বর্তমান স্থানে পরিবর্তিত হয়।

ভারতের প্রথম ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টপাদ্ধায়ের (১৮৩৮-১৮৯৪) অফিস বারাসাতে ছিল। তিনি ১৮৫৮ সালে ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আসেন এবং ১৮৯১ সাল পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।

১৯১০ সালে নাট্যশিল্প চর্চায় গঠিত হয় “বারাসাত ইভিনিং ক্লাব”।

১৯১১ সালে বারাসাত ট্রেনিং স্কুল ও বারাসাত ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়।

১৯১৩ সালে বারাসাত অ্যাসোসিয়েশনের সাধারন পাঠাগার ও জগৃতি সঙ্ঘের হাতে লেখা পত্রিকার প্রকাশ।

১৯১৫ সালে কাছারি ময়দানে বারাসাত চ্যালেঞ্জ কাপ নামক খেলার শুভারম্ভ।

অসহযোগ আন্দোলনের সময় ১৯২১ সালে বারাসাতের ভাগিরথ চট্টোপাধ্যায়ের ভুমিকা উল্লেখ যোগ্য।

১৯২১ সালে বারাসাতের প্রথম দৈনিক পত্রিকা “পল্লি বার্তা”-এর প্রকাশিত হয়।

১৯৪০ সালে শ্যামবাজার-কলকাতা-বারাসাত বাস চলাচল।

১৯৩৯ সালে ছাত্র ফেডারেশনের প্রথম সভা, “বারাসাত গার্লস্‌ স্কুল” প্রতিষ্ঠা সহ জনয়িক সিন্ধি ব্যবসায়ীর “ছায়াবানি সিনেমা হল” প্রতিষ্ঠা। এই সময় ছটোজাগুলিয়ার প্রিয়নাথ বসুর সার্কাস ভারতের প্রথম সার্কাস।

১৯৪৭ সালে গান্ধী ও শহিদ সুরাবর্দি বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে বক্তৃতা রাখেন।

১৯৪৬ সালে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহযোগিতায় পেরিচরন সরকার “বারাসাত গভর্নমেন্ট স্কুল” প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৭২ সালে বারাসাত রেলে ইলেকট্রিক লাইন আসে।

বর্তমানে যেখানে বাস স্ট্যান্ড (তিতুমির বাস স্ট্যান্ড) সেখানে আগে ফাসি দেয়া হতো।

১৯৭১ সালে জমাত ইসলামরা বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর প্রবল অত্যাচার শুরু করলে ১৬০০ –এর চেয়ে বেশি হিন্দু বিনা পাসপোর্টে বারাসাত সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকতে শুরু করে।

লেখক: সৌরভ বারুই | তথ্যসুত্র

১। এই নগর এই জনপথ – মৈত্রেয়ী গুপ্তে (প্রবন্ধ) হিন্দোল পত্রিকা।

২। চন্দ্রকেতুগড় – দিলীপ মৈতে

৩। যশোর খুলনার ইতিহাস – সতীশচন্দ্র মিত্র

৪। বাংলার পীর সাহিত্যের কথা – ডঃ গিরীন্দ্রনাথ দাস

৫। উয়িকিপিডিয়া – একটি মুক্ত বিশ্ব কোশ।

৬। প্যারিচরন সরকার ও আমরা –অজানা*

৭। ডিস্ট্রিক গেজেটিয়ার – ও.এস.ম্যালে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *