Blog

বারাসাতের উল্লেখযােগ্য কালপঞ্জী

ইতিহাসের বারাসাতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কালপঞ্জী। ইতিহাসের বারাসাত প্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান। ভারতীয় প্রাচীন সভ্যতার সব নিদর্শন বারাসাত ঘিরে ঘুমিয়ে আছে। যুগ যুগ ধরে বারাসাতে নানা প্রাকৃতিক, ভৌলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে। ইতিহাস প্রসিদ্ধ দেশী-বিদেশী বাক্তিগণ এখানে এসেছেন। ঘটেছে যুদ্ধ, আন্দোলন, নীলকরের অত্যাচার। বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী বারাসাত। এসবের গুরুত্ব কিছু কালচিহ্ন নথিভুক্ত করে দেওয়া হল।

১৫৪০-৪৫ খ্রিস্টাব্দ শের শাহের পদস্থ কর্মচারী শেখ ইসমাইল বারাসাতে বাস করেন।
১৬১৪ খ্রিস্টাব্দ মধুমুরলী পুকুর খোঁড়া হয়।
১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ নবাব সিরাজদৌল্লা সসৈন্যে বারাসাত অবস্থান করেন।
১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ হস্তিযূথের জলপানের জন্য হাতিপুকুর খোঁড়া হয়।
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ মীরাজাফর ক্লাইভকে যৌতুক দেন ২৪ পরগনা, বারাসাত সহ।
১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দ ২৪ পরগনা নাম বিধিবদ্ধ হয়।
১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ ভ্যানসিটার্ট সাহেব বারাসাতে ভিলা তৈরি করেন।
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ মধুমুরলীতে অবস্থান কালে ল্যাম্বার্ট সাহেব বৈষ্ণবধর্ম গ্রহণ করেন।
১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দ ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানি ২৪ পরগনার প্রশাসনিক দায়িত্ব পায়।
১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতকে নদিয়া জেলার মধ্যে দেখান রেনেলের জরিপপত্র।
১৭৬৪-৬৮ খ্রিস্টাব্দ সিসেস ল্যাম্বার্ট বারাসাতে ‘বিবিরহাট’ (হাটখােলা) বসান।
১৭৬৯ খ্রিস্টাব্দ জন প্রিন্সেপ বারাসাতে নীলচাষ শুরু করেন।
১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দ হেস্টিংস বারাসাতে ভিলা তৈরি করেন।
১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দ বারাসাতে বাড়ি তৈরি করেন কর্ণেল চ্যাম্পিয়ান।
১৭৮০ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতে ঘােড়দৌড় মাঠ তৈরি হয় ও ১৭৮৮ খ্রিঃ থেকে ঘােড়দৌড় চালু হয়।
১৭৮৩ খ্রিষ্টাব্দ ডাক্‌সাহেবের আমলে ক্যাডেট কলেজ তৈরি হয় বারাসাতে।
১৮০২ খ্রিস্টাব্দ ভ্যানসিটার্ট ভিলাতে লর্জ ওয়েলেসলি মিলিটারি কলেজ উদ্বোধন করেন।
১৮১১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত থেকে সামরিক কলেজ ফোর্ট উইলিয়ামে চলে যায়। এখানে জেলখানা হয়।
১৮১৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত জেলা ভেঙে সুবার্বন ডিস্ট্রিক্ট করা হয়।
১৮২৩ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতকে সদর শহর ঘােষণা করা হয়।
১৮২৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের ব্যারকপুরে সিপাহিরা অবাধ্যতা প্রকাশ করে।
১৮৩০ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতে ফরায়েজি আন্দোলন দানা বাধে।
১৮৩১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত থেকে তিতুমির বিদ্রোহ দমন করা হয়।
১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দ কালীনাথ মুনশি রােড (টাকি রােড) তৈরি হয়।
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতকে জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়। জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেসি চালু হয়।
১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ প্রাণকৃষ্ণ মিত্রের বাসভবনে বারাসাতে ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের সিদ্ধান্ত হয়।
১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দ আচার্য প্যারীচরণ সরকার বারাসাতে আসেন।
১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত জেলা স্কুল স্থাপিত হয়।
১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দ মহাত্মা কালীকৃষ্ণ, গালর্স স্কুল স্থাপন করেন রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের নতুন। ভবন আরম্ভ হয়।
১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দ কালীকৃষ্ণ দত্ত নিবাধুই বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
১৮৫১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদঘাটন হয়।
১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ হাটখােলায় বেসরকারি ভাবে বারাসাত হাসপাতাল খােলা হয়।
১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ ছােট-জাগুলিয়ার প্রথম বাংলা মাসিকপত্র প্রকাশিত হয়।
১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দ ভ্যানসিটার্ট ভিলার কাছে সরকারি হাসপাতাল হয়।
১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ প্রথম বিধবাবিবাহ হয় গােবরডাঙায়।
১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ রামতনু লাহিড়ি উত্তরপাড়া থেকে বারাসাত রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয় আসেন।
১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ চৌবেড়ের দীনবন্ধু মিত্রের নীল দর্পণ নাটক প্রকাশিত হয়।
১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের ম্যাজিষ্ট্রেট অ্যাসলি ইডেন বাধ্যতামূলক নীলচাষ বন্ধের হুমকি জারি করেন।
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের জেলা মর্যাদা চলে যায়।
১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের বেঙ্গল টেম্পােরাল সােসাইটির মদ্যপান বিরােধী। সসাসাইটি তৈরি হয়।
১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের কবিয়াল মহেশ কানার মৃত্যু হয়।
১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত পৌরসভা স্থাপিত হয়।
১৮৭১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত অ্যাসােসিয়েশন বিধিবদ্ধভাবে গঠিত হয়।
১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দ ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বারাসাতে প্রথমবার ডেপুলি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হয়ে আসেন।
১৮৮২ খ্রিস্টাব্দ
খুলনা জেলা গঠিত হয়। সাতক্ষীরা বারাসাত থেকে খুলনায় চলে যায়। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র দ্বিতীয়বার প্রাগুক্ত পদে বারাসাত আসেন।
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ বেঙ্গল সেন্ট্রাল রেলওয়ে বারাসাত রেলপথ তৈরি করে।
১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দ ব্যারাকপুর আলাদা মহকুমা হয়। দমদমের মহকুমা গৌরব চলে যায়।
১৯০৪ খ্রিস্টাব্দ বারাসাত রেল স্টেশন ঘর তৈরি হয়।
১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের পদ্মলােচন রাই ব্যাপটিস্ট মিশনের প্রধান হন। এই বছর হৃদয়পুর স্টেশন তৈরি হয়।
১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কংগ্রেসের সভা করতে বারাসাতে আসেন।
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বারাসাত আসেন।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দ বারাসাতে নাট্যচর্চা শুরু হয় এবং ইভনিং ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯১১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতে গুরু ট্রেনিং বিদ্যালয় খােলা হয়েছিল।
১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দ বারাসাত লিটারারি অ্যাসােসিয়েশন হয়।
১৯১৪-১৫ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতে প্রথম চ্যালেঞ্জ কাপ খেলা শুরু হয়।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ মুগল আমলের সরাইখানা মােড়ের নাম হয় ডাকবাংলাে মােড়।
১৯২১ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের ভাগীরথী চট্টোপাধ্যায় অসহযােগ আন্দোলনে যােগ দেন।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দ বারাসাতে শ্যামবাজার থেকে প্রথম বাস সার্ভিস চালু হয়।
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বারাসাতে এসেছিলেন।
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতের প্রথম সিনেমা হল ছায়াবাণী খােলা হয়েছিল।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ মহাত্মা গান্ধী ও সুরাবর্দি সাহেব বারাসাত আসেন।
১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ বঙ্গবিহার সংযুক্তি প্রস্তাবের বিরাধিতায় বারাসাতে সার্থক হরতাল হয়।
১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ খাদ্য-আন্দোলনে সার্থক হরতাল ঘটে বারাসাতে।
১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ বারাসাতে শিক্ষক ধর্মঘট পালিত হয়।
১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ নীলবিদ্রোহের শতবর্ষ পালিত হয় বারাসাতে।।
১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দ ইন্দিরা গান্ধী হাসনাবাদ যাওয়ার পথে বারাসাত আসেন।
১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ সি.পি.আই.-এর সর্বভারতীয় কৃষকসভা কোর্টের মাঠে।হয়।
১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ ১লা মার্চ ২৪ পরগনা দু’ভাগ হয়ে উত্তর ২৪ পরগনার সদর হয় বারাসাত।

Source:
বই: ইতিহাসের বারাসাত
লেখক: শম্ভুনাথ ঘোষ
প্রকাশক: বারাসাত সংস্কৃতি পরিষদ
সভাপতি: বিশ্বনাথ ঘোষ

# ধন্যবাদ অয়ন মজুমদার (অয়ন দা) কে, এই বইটি দেওয়ার জন্য।

# বানান ভুল চোখে পড়লে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *