পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রেসকোর্স ছিল বারাসাতের কাছারি ময়দান
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রেসকোর্স ছিল বারাসাতের কাছারি ময়দান

ইংরেজদের হাত ধরে প্রথম ঘোড়ার দৌড় শুরু বারাসাত কাছারি মাঠে

ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বের শুরু থেকেই কলকাতার অবস্থা খুব একটা ভাল ছিলনা। তৎকালীন কলকাতা ইংরেজদের কাছে জলা জঙ্গলাকীর্ণ একটি অস্বাস্থ্যকর জায়গা বলেই গণ্য হত।তবে কলকাতা যাওয়ার পথে মধ্যবর্তী অঞ্চল ছিল এই বারাসাত। তাই এই জলা জঞ্জল পূর্ণ জায়গাটি ব্রিটিশদের নজরে আসে এবং অঞ্চলটির উন্নতির দিকে নজর দেওয়া হয়৷ সেই সময় থেকে ধিরে ধিরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তাদের আনন্দ-ফুর্তির জায়গা হয়ে ওঠে এই এলাকা। কলকাতার কাছে এই বারাসাতে হেস্টিংস ভিলা তৈরি করিয়েছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস। হেস্টিংস ভিলার উত্তর পশ্চিম অংশে অনেকটা এলাকা জুড়ে ছিল একটি ফাঁকা মাঠ।

পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রেসকোর্স ছিল বারাসাতের কাছারি ময়দান
পশ্চিমবঙ্গের প্রথম রেসকোর্স ছিল বারাসাতের কাছারি ময়দান

সেই সময় সিরাজ উদ্দৌলা কলকাতা যাওয়ার পথে এই মাঠেই সৈন্য-সামন্ত নিয়ে দু দন্ড জিরিয়ে নিতেন। ইংরেজরা পরবর্তীকালে আনন্দ-ফুর্তির অঙ্গ হিসাবে এই মাঠটিকেই ঘোড়া দৌড়ের জন্য বেছে নেন। কলকাতায় ঘোড়া দৌড়ের প্রচলনের অনেক আগেই বারাসাতের বুকে দেশের সর্বপ্রথম ঘোড়দৌড়ের আয়োজন হয়েছিল ইংরেজদের হাত ধরেই। ইংরেজ আমলের সেই ঘোড়দৌড়ের মাঠের সামান্য অংশই এখন ‘কাছারি ময়দান’ নামে পরিচিত।

এই বাংলার মাটি ইতিহাসে সমৃদ্ধ। এর প্রতি কণাতে আছে ইতিহাস জড়িয়ে। তেমনই এই বাংলার বুকে উত্তর চব্বিশ পরগণার এক শহর বারাসাত। এই ছোট্ট শহরটি প্রাচীনকাল থেকেই বিখ্যাত। এই অঞ্চলটি ব্রিটিশ আমল থেকে সবার নজরে আসে। হালে এই ঐতিহাসিক মাঠের কিছু অংশই বেঁচে আছে। অর্ধেকের বেশি অংশ নগর উন্নয়নের সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়েছে। চারিদিকে বড় বড় রাস্তা, বাড়ি, ফ্ল্যাটে ঢেকে গিয়েছে। বর্তমানে মাঠটি খেলা ধুলা, প্রাতঃভ্রমণের কাজে ব্যবহৃত হয়। মাঝে মাঝে মেলাও বসে এই মাঠে। এই সকল আঞ্চলিক ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করা খুব প্রয়োজন। নয়তো নগর সভ্যতার ঔজ্বল্যে এই আঞ্চলিক ঐতিহ্যগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *