উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলাসদর বারাসাতে এবং আশেপাশে দৈনিক হাট বাজারের সংখ্যা অনেক। অধিকাংশ বাজার হাটই ১৯৪৭ এর পর সৃষ্টি। কতকগুলি মাত্র আট দশ বছরের পুরাতন। কিন্তু বারাসাতের বড় বাজারের হাটবাজার, বিশেষ করে ‘হাটখোলার হাট’ [ Barasat Bibirhat ] অতীব প্রাচীন। সাধারণ মানুষ প্রয়োজনেই বেশি করে দেখেন। প্রাচীনত্ব নিয়ে মাথা ঘামান না। অন্য কিছু মানুষ কিন্তু খ্যাপার মত খুঁজে ফেরেন প্রচীনত্বের ইতিহাস। আমি ইতিহাস লিখতে বসিনি। তা আমার সাধ্যায়ত্ব নয়। বারাসাতের প্রাচীনতম হাটের উপকথা তুলে ধরাই উদ্দেশ্য।
আমি বারাসাতের ‘বিবির হাটের’ [ Barasat Bibirhat ]কথা বলতে চাইছিলাম। নামটি আজকাল অবশ্যই বিস্মৃতির অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। দু’শ পঁচিশ বছরের পুরাতন হাটটির খবর আর কি দরকারে লাগবে। সেটা ১৭৬৪ থেকে ১৭৬৮ খৃষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময় বলে ধরা চলে। যখন একজন ‘লেডি’ এবং তখনকার বাংলা চলতি কথায় ‘বিবি’ বারাসাতের কেন্দ্রস্থলে ‘বিবির হাট’ বসিয়েছিলেন। না, নামকরণ তিনি করেননি। করেছিলেন সাধারণ মানুষেরাই।
জানতে অবশ্যই পাঠকেরা চাইবেন, কে ছিলেন সেই ‘বিবি’ কোথায় ছিল সেই হাট? সেই বিবি ছিলেন স্যার উইলিয়াম হোপবার্ট এর স্ত্রী লেডি হোপ। হাট যখন তিনি চালু করেন তখন তিনি বারাসাতের বাসিন্দা, হোপবার্ট এর স্ত্রী নন। তিনি তখন উইলিয়াম লাম্বার্ট এর স্ত্রী। কারণ হোপবার্ট পাটনায় নিহত হলে লেডি হোপ চলে আসেন পালিয়ে ও পরে লাম্বার্টকে বিয়ে করেন। বারাসাতের সুপ্রাচীন স্মৃতিস্থল, যার নামটি মাত্র আছে সেই মধু মুরলি বা মধু মুরারী পুকুর পাড়ে সুদৃশ্য ভবনে রইলেন। বিলেত চলে যাবার আগে স্থাপন করে যান বর্তমান হাটখোলা অঞ্চলে যে হাট, সেটাই তৎকালীন মানুষেরা বলতেন ‘বিবিরহাট’।
Source:
বই: ইতিহাসের বারাসাত
লেখক: শম্ভুনাথ ঘোষ
প্রকাশক: বারাসাত সংস্কৃতি পরিষদ
সভাপতি: বিশ্বনাথ ঘোষ
# ধন্যবাদ অয়ন মজুমদার (অয়ন দা) কে, এই বইটি দেওয়ার জন্য।
Reference: Barasat Online