বারাসাতের কেন্দ্রস্থল থেকে ৫/৬ কিলােমিটার দূরে কামারডাঙ্গায় (দমদম) লর্ড ক্লাইভের দ্বিতল বাড়ি এখনও আছে জীর্ণ অবস্থায়। বাংলার প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭৩-৭৪ খ্রিঃ বর্তমান কাছারি ময়দানের পাশে তৈরি করেছিলেন হেস্টিংস ভিলা। এখনও কাঠামাে আছে, পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল এখন সারান হচ্ছে। ঋষি বঙ্কিম ডেঃ ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেঃ কালেক্টর হয়ে ঐ বাড়িতেই প্রথমে বাস করতেন। ১৮৩৪ খ্রিঃ এখানেই বাড়ি করেন কর্ণেল চ্যাপম্যান। সে বাড়ি এখন নেই। রিচার্ড বারওয়েল চ্যাপম্যানের বাড়িতে থাকতেন পরবর্তী কালে। লর্ড ভ্যানসিটার্ট গভর্নর হয়ে এসে বারাসাতে তিনতলা বাড়ি করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী মিঃ লাম্বার্ট লেডি হােপকে নিয়ে মধুমুরলী পুকুর পাড়ে ছােট বাড়িতে থাকতেন। স্যার ইলাইজা ইম্পে বারাসাতে আসতেন বন্ধুদের সাথে তাস খেলতে। ১৮৪৪ খ্রিঃ চার্লস ট্রেভর বারাসাতে ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আসেন। কাপ্টেন ডি.টি.রিচার্ডসন বারাসতে ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। জন প্রিসেন্সপ এবং লুইস বলেড বারাসাতে নীলচাষ ও কারখানা করেন। গভর্নর ড্রেক বারাসাতের রেসিডেন্সিতে থাকতেন। করিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি থাকতেন চাঁপাডালিতে। রেনেলের জরিপপত্রে ১৭৬৪ খিঃ বারাসাতকে নদিয়া জেলার মধ্যে দেখান হয়। ডাফ সাহেবের সময় বারাসাতে ক্যাডেট কলেজ তৈরি হয়। লর্ড ওয়েলেসলি ১৮০২ খ্রিঃ বারাসাতে মিলিটারি কলেজ উদ্বোধন করেন। ১৮১১ খ্রিঃ মিলিটারি কলেজটি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৩১ খ্রিঃ ওয়ারেন হেস্টিংস ভিলা থেকে তিতুমির বিদ্রোহ দমন করা হয়।
অ্যাসলি ইডেন বারাসাতে ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে এসে ১৮৫৯ খ্রিঃ বাধ্যতামূলক নীলচাষ বন্ধের হুকুম দেন। সিন্দের আমিরকে ইংরেজরা বারাসাতে এনে বন্দী করে খে ১৮৫৭ খ্রিঃ। বর্তমান হাটখােলা বারাসাতের প্রাচীনতম হাট। জন্ম সময়ে নাম ছিল বিবিরহাট। লেডি হােপ পাটনায় স্বামী হােপবার্টের মৃত্যুর পর বারাসাতে এসে উইলিয়াম ল্যাম্বার্টের সাথে থাকতেন। লম্বার্ট বৈষ্ণবধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। এই লেডি হােপই ১৭৬৪-৬৮ খ্রিঃ মধ্যে বিবিরহাট প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৬৮ খ্রিঃ হােপ বিলেত চলে যান। বিবিরহাটের পর সৃষ্টি হয় বাবুরহাট। স্রষ্টা রাজা রামমােহন রায়ের পরিবারের হরিমােহন রায়। বাবুরহাট ছিল মধ্যমগ্রামের গরুর হাটের দক্ষিণে।
Source:
বই: ইতিহাসের বারাসাত
লেখক: শম্ভুনাথ ঘোষ
প্রকাশক: বারাসাত সংস্কৃতি পরিষদ
সভাপতি: বিশ্বনাথ ঘোষ
# ধন্যবাদ অয়ন মজুমদার (অয়ন দা) কে, এই বইটি দেওয়ার জন্য।